"তুমি কোন হরিদাস পাল যে, তোমার কথা শুনতে হবে?" এই কথাটি আমরা প্রায়ই শুনে থাকি এবং এটি প্রবাদে পরিনত হয়েছে।
আজ একুশে ফেব্রুয়ারি ঐতিহাসিক "মাতৃভাষা দিবসে" চলুন এই হরিদাস পাল সম্পর্কে কিছু জানার চেষ্টা করি। যতদূর জানা যায়, 1876 খ্রিস্টাব্দে পশ্চিমবঙ্গের রিষরায় অতিদরিদ্র এক পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম ছিল নিতাই চরণ ।পিতার মৃত্যুর পর হরিদাস 1892 খ্রিস্টাব্দে কাজের সন্ধানে গ্রাম ছেড়ে কলকাতায় আসেন। কলকাতায় এসে সামান্য টাকায় একটি সোনার দোকানে কাজ নেন। 1897 খ্রিস্টাব্দে তার নিঃসন্তান মামা মারা যান, উত্তরাধিকারসূত্রে মামার সমস্ত সম্পত্তির মালিক হন হরিদাস পাল।
রাতারাতি তার অবস্থার উন্নতি ঘটে এরপর তিনি কলকাতার বড় বাজারে কাঁচ ও লণ্ঠনের দোকান খোলেন।হরিদাস পাল ছিলেন অত্যন্ত পরিশ্রমী, বুদ্ধিমান, ও দয়ালু ।সবাই তাঁকে ভালোবাসতো এবং বিশ্বাস করত। কয়েক বছরের মধ্যেই কলকাতা ছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় তাঁর ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। বছর দশেকের মধ্যেই তিনি বিপুল অর্থ ও সম্মানের অধিকারী হয়ে যান। বিপুল অর্থ থাকা সত্ত্বেও হরিদাস পাল ছিলেন অত্যন্ত উদার, সহানুভূতিশীল ও বুদ্ধিমান মানুষ। দরিদ্র মানুষের জন্য তিনি অনেক দাতব্য প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। তাঁর মালিকানাধীন অনেক বড় বাড়িতে দরিদ্রদের জন্য বিনামূল্যে বসবাস করার ব্যবস্থা করেন। জনসাধারণের কাছে তিনি শ্রদ্ধার পাত্র হয়ে ওঠেন ।কাউকে কিছু বললে সঙ্গে সঙ্গে তা পালন করত মানুষ, কারন মানুষের মনে বিশ্বাস তৈরি হয়েছিল যে হরিদাসপাল যা বলবেন তাতে মানুষের মঙ্গল হবে।
1933 সালে দুরারোগ্য কিডনির রোগে আক্রান্ত হয়ে তার মৃত্যু ঘটে। বর্তমানে হরিদাস পালের মত প্রভাব-প্রতিপত্তি ফলানোর চেষ্টা করে, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তার সেই গুণ নেই ,এমন লোককে অবজ্ঞা করে তাই বলা হয় "তুমি কোন হরিদাস পাল যে, তোমার কথা শুনতে হবে?"
ধন্যবাদ।
গৌরী সেন সম্বন্ধে লেখো
উত্তরমুছুন